লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন : নরসিংদীতে কিশোরী আজিজা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার তদন্তে নতুন মোড় নিয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আজিজার কথিত প্রেমিক রোমানসহ ৩ যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে তারা। পুলিশ জানায়, আজিজার অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় প্রেমিক রোমান ও তাঁর বন্ধুরা। তবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত মামলার প্রধান আসামী চাচী বিউটি বেগম ও তাঁর মা সানোয়ারা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার সকালে নরসিংদীর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার আমেনা বেগম।
পুলিশ সুপার আমেনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, কিশোরী আজিজার বিয়ে ঠিক করে পরিবারের লোকজন। কিন্তু আজিজার বিয়েতে মত না থানায় ঘটনার দিন গত শুক্রবার তাঁর প্রেমিক রোমানের সঙ্গে দেখা করার জন্য নরসিংদী শহরে আসে। ওই সময় প্রেমিক রোমান ও তাঁর বন্ধু সজিব, রেজাউল ও সুজন কিশোরী আজিজাকে নরসিংদী শহরের সুইচ গেইট এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে প্রেমিক রোমান ও আজিজার অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে বন্ধুরা। ওই অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে প্রেমিক রোমানের বন্ধুরা আজিজার সঙ্গে থাকা নগদ টাকা, ৩টি মোবাইল ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। এবং আজিজার ভাইকে ফোন করে আজিজাকে ছাড়িয়ে নিতে এক লক্ষ টাকা দাবী করে। অন্যথায় আজিজার অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। আজিজার ভাই এতে অসম্মতি জানালেও খালা ২০ হাজার টাকা দেয়ার অঙ্গীকার করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আজিজা বাড়ি ফেরার পথে কুঠির বাজারের মিজানুর রহমানের দোকান থেকে এক লিটার কেরোসিন তেল কিনে বাড়িতে যাওয়ার সময় বাড়ির অদূরে তাকে দগ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
পুলিশ সুপার আমেনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, নরসিংদী শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রেমিক রোমান হোসেন ও তাঁর দুই বন্ধু সুজন মিয়া ও রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা মঙ্গলবার জেলা আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওয়ায়েজ আল করুণী এর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। জিন্মিকারীরা আজিজার কাছ থেকে ৩টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। এর মধ্যে চাচী বিউটি বেগমের চুরি যাওয়া মোবাইলটিও ছিল।
পুলিশ সুপার বলেন, এই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামী চাচী বিউটি বেগম ও তাঁর মা সানোয়ারা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ ও মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামী রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তারের করে জিজ্ঞাসাবাদের আগে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।