‘ম্যামরা টয়লেট পরিষ্কার করায়, স্কুলে পড়বো না’
ঠাকুরগাঁও | নরসিংদী প্রতিদিন-
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২০:
শৌচাগার পরিষ্কার করে দিলে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেবে ম্যাম, কিন্তু ফেল করে দিয়েছে এই বলে কেঁদে বুক ভাসায় শিশু শিক্ষার্থী খুশি! সে কেঁদে কেঁদে বলে আমাকে পাশ করে না দিলে আর আসবো না স্কুলে। খুশি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর দক্ষিণ আরাজী শিংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। একই অভিযোগ রাব্বী ইসলাম ও স্বাধীন বেসরার। তারা তিনজন একই শ্রেণির শিক্ষার্থী। এমন অভিযোগ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির প্রাক্তন শিক্ষার্থী রুপালি মুরমু।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পরীক্ষায় নম্বর পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে নিয়মিত স্কুলের শৌচারগার পরিষ্কার করাতো শিক্ষকরা। এ ছাড়া ম্যামরা তাদের খাওয়ার থালা-বাসন পরিষ্কার করিয়ে নেয়।
দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী খুশির বাবা খলিল প্রতিবাদ করে বলেন, “শিশুদের দিয়ে টয়লেট পরিষ্কার করাটা অমানবিক ও দুঃখজনক। স্বাধীন বেসরার বাবা মুনকু বেসরা বলেন, “আমাদের শিশুরা কি সুইপার?”
জানা গেছে, স্কুলটির মোট শিক্ষার্থী ২০৯ জন। যার মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৪৭ জন ছাত্র-ছাত্রী। এ বছর বার্ষিকী পরীক্ষায় ১৭ জন শিক্ষার্থীরা অকৃতকার্য হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির ৪৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৯ জন পরীক্ষায় পাশ করেছে। আর ৪র্থ শ্রেণির ৪৯জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৬জন পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট নয় বলে জানালেন অভিভাবকরা। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সঞ্চিতা রাণীর বাবা প্রদীপ কুমার রায় অভিযোগ করে বলেন শিক্ষকদের উদাসীনতা ও অবহেলার কারণে পরীক্ষার ফলাফল আশানুরুপ হচ্ছে না এই বিদ্যালয়ের।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুন নাহার বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শিশুদের টয়লেট পরিষ্কার করানো শেখানো হচ্ছে। তিনি পরীক্ষার ফলাফল বির্পযয়ের জন্য দায়ী করেন অভিভাবকদের অসচেতনাকে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুনা লায়লা এ প্রসঙ্গে বলেন বিষয়টি জেনে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।