‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই; যদি তোমরা সুউচ্চ-সুদৃঢ় দুর্গেও অবস্থান কর।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৭৮)
পবিত্র কোরআনে মৃত্যুর ব্যাপারে মহান রব্বুল আলামীন এভাবেই হুশিয়ারী করেছিলেন। কুরআনের বর্ণনায় প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তবে মৃত্যুর পর মানুষের নতুন একটি জীবন শুরু হয়, যার নাম বারযাখী জীবন। এই জীবন দুনিয়া ও কেয়ামতের মধ্যবর্তী সময়। তবে মুর্দাকে দাফনের পরে তার কবরে কতদিন এই সময়কাল চলবে?
কবরের জগতকে কোরআন ও হাদীসে ‘বারযাখ’ বলেও অভিহিত করা হয়েছে। আরবী ‘বারযাখ শব্দের অর্থ পর্দা, আবরণ, ঢাকনা, বেড়া। আলমে বারযাখ বা বারযাখের জগত বলতে ওই জগতকে বোঝায়, যেখানে মানুষ মৃত্যুর পর হতে কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে। সেদিন প্রত্যেক মানুষের শরীরের সঙ্গে রুহ বা আত্মাকে সংযুক্ত করে কেয়ামতের ময়দানে উপস্থিত করা হবে।
এ সম্পর্কে পবিত্র আল-কুরআনের সুরা কাহফের ৯৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَجَمَعْنَاهُمْ جَمْعًا
‘আমি সেদিন তাদের দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব এবং তখন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে আনব।’
মহান আল্লাহ সুরা ইয়াসিনের ৫১ নম্বর আয়াতে বলেন, وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ
‘যখন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন মানুষ কবর থেকে তাদের পালনকর্তার দিকে ছুটে আসবে।’
পবিত্র কুরআনের এ দুই আয়াত থেকে এটা স্পষ্ট যে, যখনই শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে তখনই কিয়ামতের কঠিন দিন শুরু হয়ে যাবে। আর এসব আয়াতে গভীরভাবে মনোনিবেশ করলে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, কিয়ামতের দিন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত মানুষকে বারযাখের বা দুনিয়া ও কেয়ামতের মধ্যবর্তী সময়কালের জীবন কাটাতে হবে।