পাবনার বেড়া উপজেলার রবিউল ইসলাম (১৩) মাত্র ৪ মাস ২৬ দিনে অর্থাৎ ১৪৬ দিনে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছে। তার এমন কৃতিত্বে খুশি শিক্ষক-স্বজনরা।
শিক্ষকদের সঠিক দিক-নির্দেশনা চেষ্টা আর ভালোবাসায় অল্প সময়ে কোরআনের হাফেজ হতে পেরেছে বলে জানায় রবিউল। ভবিষ্যতে একজন বড় আলেমে দ্বীন হয়ে দেশ ও মানুষের খেদমত করার স্বপ্ন তার।
উপজেলার কৈটোলা ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে দরিদ্র পরিবারের সন্তান রবিউল। বাবা শফিকুল ইসলাম ভাঙারির ব্যবসা করতেন। বর্তমানে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তার একটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। মা শাহানারা খাতুন গৃহিণী। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় রবিউল।
আলাপকালে রবিউল ইসলাম জানায়, শিক্ষাজীবনের শুরুতে প্রথমে তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেন তার পরিবার। পরে তাদের ইচ্ছা হয় ছেলেকে হাফেজ হিসেবে গড়ে তোলার। সেই লক্ষ্যে বছর দুই আগে রবিউলকে ভর্তি করেন একই উপজেলার মানিকনগর আল মামুন হাফিজিয়া ক্বওমিয়া মাদ্রাসায়। সেখানেই পড়াশোনায় সবার নজর কাড়ে রবিউল। এক পর্যায়ে সর্বশেষ হেফজ সম্পন্ন করে।
রবিউলের সাফল্যে খুশি তার সহপাঠীরাও। তায়েব হুসাইন ও মনিরুল ইসলাম নামে তার দুই সহপাঠী জানায়, রবিউল ছাত্র হিসেবে ভালো ও মেধাবী। দ্রুত পড়া মুখস্থ করতে পারে। অনেকের পরে ভর্তি হয়ে তাদের আগেই হাফেজ হয়েছে। তারা খুব খুশি।
রবিউলের ফুপা মনজুরুল ইসলাম মনজু জানান, ‘রবিউল খুব দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। রবিউল যাতে ভবিষ্যতে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে, একজন বড় আলেম হতে পারে সেজন্য তার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।’
ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. শফিকুল হাসান ও হাফেজ আল আমিন হুসাইন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো লাগছে। এই মাদ্রাসায় এটাই প্রথম এত অল্প সময়ে একজন হাফেজ হয়েছে। আমরা যখন যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছি সেটি মেনে চলেছে রবিউল। সে অনেক মেধাবী, সে চেষ্টা করছে, যে কারণে এই সফলতা। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই রবিউলকে যেন আল্লাহ আলেম হিসেবে কবুল করেন।’
মানিকনগর আল মামুন হাফিজিয়া ক্বওমিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুফতি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘রবিউল ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছাত্র, মনোযোগী এবং মেহনতি। তার এই মেহনত যদি সে ধরে রাখতে পারে তাহলে একজন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম হতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ২৩০ জন ছাত্র এবং ৯ জন শিক্ষক রয়েছেন। মাদ্রাসাটিতে জায়গা না থাকায় মসজিদে ছাত্রদের লেখাপড়া করাতে কষ্ট হচ্ছে। তাই মাদ্রাসার একটি ভবন নির্মাণে সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’