‘আমার মনে হচ্ছে এটা হত্যা। মুনিয়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি ছিল। তাহাজ্জত পড়তো। পাঁচ ওয়াক্ত যে নামাজ পড়ে সে কীভাবে সুইসাইড করে? যদি সুইসাইড করেও থাকে এমন অপমানজনক কিছু করা হয়েছে যা সে নিতে পারেনি। এখানে অনেক সিন্ড্রোম ছিল যে মার্ডার করা হয়েছে। আমার মনে হয় না, সে সুইসাইড করতে পারে। আমরা তো ঝুলন্ত পেয়ে আত্মহত্যা ভেবেছি। পরে মাথায় আসলো একটা মানুষ যদি ঝুলে যায়, তার পা ছটফট করে, তাহলে তো পায়ের নিচের সিটটা নিচে পড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সিটটা তো সাজানো ছিল।’
গুলশানে ফ্ল্যাটে মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনার পর গণমাধ্যমকে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন তার বড় বোন নুসরাত জাহান।
গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গুলশান ২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই রাতেই রাজধানীর গুলশান থানায় ৩০৬ ধারায় ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়া’র অভিযোগে বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীর বিরুদ্ধে মামলা করেন মোসারাতের বড় বোন নুসরাত জাহান। মামলা নম্বর২৭। এরপরই এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়।
এরইমধ্যে আদালত সায়েমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সায়েম আগাম জামিন পেতে হাইকোর্টে আবেদনও করেছেন। সেই আবেদনের আজ শুনানি হতে পারে।
এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে মুনিয়ার সঙ্গে তার শেষ কথোপকথন ও বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির সঙ্গে মুনিয়ার প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে বিস্তারিত জানান নুসরাত।
নুসরাত বলেন, ‘ও মরে গেছে। এ রমজান মাসে ওরে মাইরা ফেলছে, না হয় মরে গেছে, না হয় বাধ্য করছে। যেটাই করুক ওইটারই বিচার চাই। যেই করেছে আমি চাই বিচার হোক। আমি আপনাদের মাধ্যমে এটা সরকারকে বলতে চাই।’
নুসরাত বলেন, ‘আমায় একটা নাম্বার থেকে ফোন করে টাকার জন্য। আমাকে অনেক নোংরা কথা বলেছে। আমি নাকি আনভীরকে ফাঁসাতে মুনিয়াকে ব্যবহার করেছি। আমি নাকি মুনিয়াকে দিয়ে ব্যবসা…। ফোনে আমাকে বলে, এখন মিডিয়া করতেছি, কথা বলতেছি, এগুলো নাকি টাকা নেয়ার জন্য করতেছি। ফোনে আমাকে বলে, বোনকে দিয়ে বিজনেস করানোর জন্য আমি নাকি আনভীরকে ফাঁসাচ্ছি। এরপর আমি ফোন কেটে দিই।’
মুনিয়ার বোন আরও বলেন, ‘আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। অনেক সৎ ছিলেন। আমাদের শহরের সবাই জানে ওনারা কেমন ছিলেন। ওনারা নেই, ওনাদের সন্তান, এতিম একটা মেয়ে। তার সাথে যা হয়েছে, আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চাই। বাংলাদেশে সবকিছুর ঊর্ধ্বে তিনি, তাঁর কাছে আমার সন্তানের মতো বোনের অপমৃত্যুর বিচার চাই। সে (সায়েম) হয়তো অনেক বড় কিছু… তাই বলে কি বিচার পাবো না? আমার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটা ছাড়া আর কোনও কিছু চাওয়ার নাই (বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন বোন হারানো নুসরাত)।