নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০১৯:
সপ্তাহখানেক বাদেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। রোজাকে সামনে রেখে এরইমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার চড়তে শুরু করেছে। ভোক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, এখনই সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর মালিবাগ, মুগদা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় ও বিদেশি পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
পেঁয়াজের মতোই রসুনের বাজার ঊর্ধ্বমুখি। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে আমদানিকৃত রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়, দেশি রসুন ১০ টাকা বেড়ে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আদার দাম। এক মাসের ব্যবধানে আদার দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে।
সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। চিনির দামও কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। এছাড়া ছোলা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৯০ টাকায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঁচাবাজার, মাছ ও মাংসের বাজারও বাড়তির দিকে। মালিবাগ বাজারে কেনাকাটা করতে আসা বাবলু মিয়া বলেন, ‘সপ্তাহখানেক বাদেই রোজা শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বাড়ানোর পায়তারা হচ্ছে। সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া।’ এদিকে আসন্ন রমজানে পণ্যের দাম বাড়ানোর কোনও অজুহাত সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেছেন, ‘রমজানে পণ্যের দাম তেমন বাড়বে না। কারণ মজুতসহ সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে। আমাদের কাছে যা রিপোর্ট আছে তাতে প্রয়োজনের তুলনায় নিত্যপণ্যের মজুত অনেক বেশি। তবে চিনির কেজিতে হয়তো ১-২ টাকা বাড়তে পারে। কারণ চিনির উৎপাদন খরচ বেড়েছে।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘রমজানে এবার পণ্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর মনিটরিং করা হবে। কোনও অজুহাতেই কাউকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর সুযোগ দেয়া হবে না। কঠোর হাতে দমন করা হবে।’
রমজান উপলক্ষে গত ২২ এপ্রিল থেকে সারা দেশে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় শুরু করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। প্রথম অবস্থায় তিনটি পণ্য (চিনি, ভোজ্যতেল ও মসুরের ডাল) বিক্রি করবে। তবে খেঁজুর ও ছোলা রমজানের আগেই বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছে টিসিবি। যা চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত।
টিসিবি সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ট্রাকে করে ১৮৭টি স্পটের মধ্যে রাজধানীতে ৩৫টি স্পটে, চট্টগ্রামে ১০টি স্পটে, এছাড়া প্রতিটি বিভাগে ৫টি করে এবং প্রতিটি জেলায় একটি করে স্পটে মোট ২ হাজার ৮২৭ জন ডিলার ট্রাকে করে এই পণ্য বিক্রয় করবেন।
আর এসব পণ্যের মধ্যে চিনি ৪৭ টাকা কেজি, ভোজ্যতেল (সয়াবিন) ৮৫ টাকা লিটার, মসুরের ডাল ৪৪ টাকা কেজিতে কিনতে পারবেন ক্রেতারা।
বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যাতে না বাড়তে পারে পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষের রমজানে যেন কোনও কষ্ট না হয়, এজন্য রোজা শুরুর আগেই খোলাবাজরে ন্যায্যমূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি।