গাজীপুরে যৌতুকের দাবিতে শশুর বাড়ির সদস্যদের নির্যাতনে মর্জিনা (২২) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পর নিহতের স্বামী রুবেল, শ্বশুর, শাশুড়ি গা ঢাকা দিয়েছে।
জানাগেছে, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে গৃহবধূ মর্জিনাকে অসুস্থ অবস্থায় টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক রিকশাচালক। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মর্জিনা। টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মর্জিনা কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উদাউদকান্দি উপজেলার উত্তরটিলি এলাকার মানিক মিয়ার মেয়ে।
নিহতের বাবা মানিক মিয়া বলেন, আড়াই বছর আগে মুঠোফোনে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের পটকা গ্রামের রুবেলের সঙ্গে পরিচয় হয় মর্জিনার। মুঠোফোনে পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই মর্জিনার স্বামী রুবেল ও শাশুড়ি যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। বিভিন্ন অজুহাতে একাধিকবার টাকা চাইত তারা। টাকা না দিলেই মর্জিনার উপর চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন।
গত শুক্রবার (২ জুলাই) মর্জিনা মুঠোফোনে জানায় শশুরবাড়ির ঘর মেরামতের জন্য টাকা দরকার। কিন্তু টাকা দিতে দেরি হওয়ায় মর্জিনাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন চালায় স্বামী রুবেল ও তার মা। সোমবার দুপুরে মর্জিনা ফোন করে জানায়, ‘শশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সইতে না পেরে সে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। এটাই হইতো তার শেষ কথা।’ এর কিছুক্ষণ পরে হাসপাতাল থেকে ফোনে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পাই।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত নার্সিং ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অসুস্থ অবস্থায় একজন রিকশাচালক গৃহবধূ মর্জিনাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। নিহতের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চাউলের পোকা নিধনের কীটনাশক ওষধ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে কীটনাশক ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ বলেন, নিহতের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।