1. khandakarshahin@gmail.com : Breaking News : Breaking News
  2. laxman87barman@gmail.com : laxman barman : laxman barman
  3. shahinit.mail@gmail.com : narsingdi : নরসিংদী প্রতিদিন
  4. msprovat@gmail.com : ms provat : ms provat
  5. hsabbirhossain542@gmail.com : সাব্বির হোসেন : সাব্বির হোসেন
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০

নরসিংদীতে প্রায় দুইশ পরিবারের আয়ের উৎস : বাঁশ-বেতের হস্তশিল্প

ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন
  • প্রকাশের তারিখ | বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭
  • ৩৬১ পাঠক

নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের নাম খৈনকুট। এলাকাটি দীর্ঘদিন যোগাযোগ ও আর শিক্ষা ব্যবস্থায় অনুন্নত থাকলেও সম্প্রতি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি আর শিক্ষা লাভের সুযোগে এলাকার পরিবেশ আগের তুলনায় অনেকটা এগিয়েছে। এলাকাটি লালমাটি ও টিলা টেঙ্গর বেষ্টিত হওয়ায় এখানে হরেক রকমের ফলফলাদি ফলে। আর বিভিন্ন পেশায় নিয়েজিত রয়েছেন এই এলাকার সাধারণ জনগণ। কিন্তু এই এলাকাটিতে দীর্ঘদিন ধরে বাঁশ-বেতের কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছেন দুই শতাধিক পরিবারের সদস্যরা।
সরেজমিনে শিবপুর উপজেলার খৈনকুট গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ মোতালিব মিয়ার কাছে তাঁর এই পেশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আগে অন্যত্র তাতের কাজ করতাম। এক সময় এই তাতের কাজ বিলুপ্ত হওয়ার পরে ২০ বছর ধরে এই বাঁশ বেতের কাজ করেই সংসার চালাচ্ছি। আমার এই এসময় বিশ্রাম নেয়ার কথা থাকলেও আমি কাজ চালিয়ে যাচ্ছি অবিরত। আমার এতে তেমন কোনো সমস্যা হয়না। আমি একটি পর্যায়ের কাজ করে দিলে বাকি কাজ আমার ছেলে করে।

এই বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই, পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে দেখে দেখেই শিখে নিয়েছি।
একই এলাকার মোস্তাফা মিয়া জানান, আমরা এই এলাকায় বেলা, পুরা, ঝুড়ি, টুকরিসহ প্রায় ৪/৫ প্রকারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করে থাকি। আমরা আমাদের পরিবারের বড়দের কাছ থেকে এই কাজ দেখে দেখে শিখেছি। আমাদের কারিগরি বা কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ নেই। তাই আমাদেরকে যদি কোনো সংস্থা ও সরকারীভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো তাহলে আমরা আরো বেশি প্রকারের জিনিসপত্র তৈরি করতে পারতাম। এছাড়া আমাদের তেমন পুঁজি নেই। অল্প পুঁজি দিয়ে বাঁশ ক্রয় করে লোকজন নিয়ে এগুলো তৈরি করি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বড় বড় পাইকারগণ সপ্তাহে একদিন এসে আমাদের পণ্যগুলো নিয়ে যায়।

ভৈরবের হাজী আসমত ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. সোহেল মিয়া জানান, আমি শিবপুরের খৈনকুট এলাকায় মামার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করি। তাই এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি এই বাঁশ বেতের কাজটি স্বতঃস্ফুর্তভাবেই করে যাচ্ছি। এতে করে আমার মাসিক কমপক্ষে ৮/১০ হাজার টাকার কাজ করতে পারি। আর আমি এ কাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই চালাতে পারি। আমি এখান থেকে কলেজে যাতায়াত করতে দৈনিক প্রায় ৭০/৮০ টাকা খরচ হয়। আমার বাবার বাড়ি সিলেটে। ওখানে তেমন কাজকর্ম নেই। তাই এখানে মামার বাড়িতে থেকে লেখাপড়াও চালাই পাশাপাশি লেখপড়ার খরচও নিজেই জোগার করতে পারছি। সরকারী বা বেসরকারী পর্যায়ে আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে আমরা আরো বেশি প্রকারের জিনিসপত্র তৈরি করতে পারতাম।
এই এলাকার সূর্যবান জানান, বয়স প্রায় ৭০ এর কাছাকাছি। স্বামী মারা গেছে প্রায় ২০ বছর আগে। একটি ছেলে রিক্সা চালিয়ে সংসার চালায়। আমিও সংসারের অভাব অনটন বুঝি, তাই আমার ছোটো খাটো খরচ আর পানের পয়সা নিজেই জোগার করি। তাই এলাকার আট দশজনের মতো খুচি তৈরির কাজ করি। একটি খুচি তৈরির কাজ করলে ৩ টাকা পাই। এভাবে সংসারের অন্যান্য কাজ করে মাসে ১৫/১৬শত টাকা রোজগার করতে পারি। আর এই কাজ করতে তেমন কষ্ট হয়না।

এই সকল পণ্য এলাকা থেকে সংগ্রহ করে আলমাছ মিয়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় মেলা, পার্বন বা বড় বড় হাটে নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। এভাবে দেখা গেছে তিনি লাখ লাখ টাকার জিনিসপত্র ও বিাক্র করে যাচ্ছেন। তিনি জানান, ১৯৯১ সালে ইউকে এর একটি সহায়তা সংস্থার উদ্যোগে এলাকায় একটি এনজিও কিছু লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সেই থেকে এলাকায় এই কাজের যাত্রা শুরু। তবে বর্তমান সময়ে সরকার বা কোনো সাহায্য সংস্থা এলাকার বেকার লোকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কিছু আর্থিক সহায়তা দিলে এলাকাটি একটি কুটির পল্লী হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। আর এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে আসতে পারি।

এবিষয়ে শিবপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শিকদার মাহমুদ হোসেন বলেন, এই এলাকার মানুষের জন্য আমরা যুব উন্নয়নের মাধ্যমে কুটির শিল্প বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার চিন্তা ভাবনা করছি। আর শুধু প্রশিক্ষণ নয় তাদের প্রশিক্ষণ শেষে পরিবার ভিত্তিক ঋণ দিয়ে এলাকার বেকারত্ব দূর করে এই বাঁশ বেতের শিল্পটাকে আরো বেগবান করার জন্য চেষ্টা করবো।

বিসিক ও কুটির শিল্পবিষয়ক জেলা কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমরা সরকারী প্রতিষ্ঠান। আমাদের জনবল ও আর্থিক কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যার কারণে আমরা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কোনো কিছু করতে পারিনা।
শিবপুর উপজেলার খৈনকুট গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বাঁশ বেতের এই কুটির শিল্পের সাথে জড়িত। শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের লোকেরাও এই পেশার সাথে যুক্ত রয়েছেন। এখন তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা পেলে এলাকাটি হয়ে উঠতে পারে একটি কুটির পল্লী। যারফলে এলাকায় স্বচ্ছলতা ফিরে আসতে পারে। এই এলাকার তৈরি পণ্য নরসিংদীসহ সিলেট, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, ডেমড়া, নারায়নগঞ্জ জেলায় পৌঁছে যাচ্ছে বড় বড় পাইকারদের মাধ্যমে।



সংবাদটি শেয়ার করিুন

এই পাতার আরও সংবাদ:-



বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০



DMCA.com Protection Status
টিম-নরসিংদী প্রতিদিন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহিন আইটি এর একটি প্রতিষ্ঠান-নরসিংদী প্রতিদিন-
Theme Customized BY WooHostBD