ধর্ম ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,বুধবার,১৫ আগস্ট ২০১৮:
আর মাত্র ক’দিন বাদেই পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদে দেশের প্রতিটি প্রান্তে পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। মূলত মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের জন্য পশু কোরবানি দেয়া হয়ে থাকে।
কিন্তু অনেকেই সঠিক নিয়ম মেনে পশু কোরবানি করেন না। মহান আল্লাহ যেন আপনার উৎসর্গীকৃত কোরবানি কবুল করেন সেজন্য অবশ্যই কিছু নিয়ম মানা ও নিয়ম জানা আবশ্যক।
সেক্ষেত্রে প্রথম শর্ত হচ্ছে- নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবাই করা উচিৎ। সেটা সম্ভব না হলে অন্যের দ্বারাও কোরবানির পশু জবাই করানো যেতে পারে। তবে কোরবানির সময় কোরবনি দাতার উপস্থিত থাকা উচিৎ।
আসুন পাঠক কোরবানির পশু জবাইয়ের আরও কিছু নিয়মরীতি জেনে নিই:
জবাই বা নহরের পদ্ধতি:
জবাই করার সময় পশু ক্বিবলামুখী করে শোয়ানো। অতঃপর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করা।
আর আপনি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ না বলেন তবে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। তবে ভুলবশত বিসমিল্লাহ বলতে না পারলে সেই কোরবানি হালাল হয়।
কোরবানির শুদ্ধ:
জবাই করার সময় কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী, এবং উভয় পাশের দুটি রগ অর্থাৎ মোট চারটি রগ কাটা জরুরি। কমপক্ষে তিন যদি তিনটি রগ কটা হয় তবে কোরবানির শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দু’টি রগ কাটা হয় তবে কোরবানি দুরস্ত হবে না। (হিদায়া)
কোরবানির জন্য ব্যবহৃত ছুরি ভালভাবে ধার দিয়ে নিতে হবে। যাতে জবাইয়ের সময় পশুটি অতিরিক্ত কষ্ট না পায়। আপনি এক ছুরি দিয়ে জবাই শুরু করে চামড়া কিছু কাটার পর আরেকটি ছুরি ব্যবহার করতে পারেন না।
জবাইয়ের সময় জবাইকারীকে সাহায্য করার জন্য পাশে যিনি বা যারা থাকবেন তাদেরকেও বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলতে হবে। ইচ্ছেকৃত কেউ যদি না বলেন তবে কোরবানি হারাম হবে।
কোরবানির ক্ষেত্রে মন স্থির করা জরুরি। নিয়ত থাকতে হবে নিখাদ। মুখে জোরে জোরে না বললেও চলবে। মুখে দোয়া পড়া উত্তম। তবে নিয়ত ঠিক রেখে মনে মনে বলুন, ‘আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি আদায় করছি।’
কোরবানির পশু ক্বিবলার দিকে শোয়ানোর পর দোয়া পাঠ: উচ্চারণ- ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা। অতঃপর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে কুরবানির পশু জবাই করা।
যখন কোরবানির পশু জবাই হয়ে যাবে তারপর ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিমা আলাইহিমাস সালাতা ওয়াস সালাম’ বলে দোয়া পাঠ করতে হবে।
কেউ যদি একা একা কোরবানির পশু জবাই করে তবে তাকে মনে মনে ‘মিন্নি’ উচ্চারণ করতে হবে। আর অন্যের কোরবানির পশু জবাই করার সময় ‘মিন’ বলে যিনি কোরবানির মালিক তার নাম উচ্চারণ করতে হবে।